Wednesday, June 27, 2018

ভালোবাসার প্রথম সিঁড়ি বিবাহ

"ভালোবাসার প্রথম সিঁড়ি বিবাহ"
         ইকরামুল হক জাবের

মানব সন্তানের আগমনের দ্বারা দুনিয়াতে কিয়ামত পর্যন্ত।নর-নারীর মাধ্যমে আল্লাহ ভরপুর করে রাখবেন কিয়ামত অবধি ।মহান আল্লাহ তাঅালা তাঁর স্বীয় শক্তির প্রাবল্যে, মানব সন্তানের আগমনের যে ক্রমধারা জারী রেখেছেন।ক্রমধারাটি স্থাপন হয়েছে স্বামী-স্ত্রী মাধ্যমে।আল্লাহ তাআলা এরই মাধ্যমে এই ভূ-পৃষ্ট নর নারীর দ্বারা সুন্দর ও সুখময় করে কিয়ামত পর্যন্ত তা বহমান রাখবেন।আবার তিনি একদল মানবের মূত্যু নামের ঘণ্টা বাজান যে ঘণ্টা বাজলে চলে যেতে হয় শান্তিপুরে। সেখান থেকে আর ফিরে আসা যায় না,আসা আদৌ সম্ভব নয়।
যদি আল্লাহ স্বামী-স্ত্রীর মাধ্যমে নর-নারী আসার ধারাবাহিকতা বন্ধ রাখতেন,তাহলে ভূ-পৃষ্ট মরুভূমির ন্যায় ফাঁকা হয়ে যেত,হিংস্র জানোয়ার পশু-পাখি ছাড়া আর কিছুই থাকত না। থাকত না নিবিড় ভালোবাসা
.
কষ্ট,যাতনা,ক্লেশ ,সুখ-দুখ আছে বলেই ভূ-পৃষ্ট এত সুন্দর।মানবের মাঝে ভালোবাসার গুণ আছে, আছে আদর ও সোহাগ ।আর ভালোবাসার প্রথম সিড়ি হলো বিবাহ তথা স্বমী-স্ত্রী এই সিঁড়ি দিয়েই ভালোবাসার ফুলে, রাঙানো পথে পা বাড়াতে হয় এই পথের যাত্রী না হয়ে অন্য পথের যাত্রী হয়ে ভালোবাসা আদর সোহাগ খুঁজলে ভালোবাসার নামে যাতনা,ক্লেশ, প্রতারণা ও বেদনা ছাড়া কিছুই আশা করা যায় না।
.
দ্বিতিয় সিঁড়ি সংসার প্রথম সিঁড়ি অতিক্রম করে আসতে হয়। দ্বিতিয় সিঁড়িতে আসার পর স্বামী-স্ত্রী গভীর ভালোবাসায় নিমগ্ন হয়।এখানে খুঁজে পায় একে অপরের কাছে আনন্দ ও শান্তি ,শত বেদনা ও কষ্টের পর স্ত্রী স্বামীর বুকে মাথা রেখে অনুভব করে অনাবিল সুখ।স্ত্রী যেন দুনিয়ার বেহেস্তে ডুবে যায়।এভাবে গভীর ভালোবাসার পথ ক্রমান্বয়েে চলার পর অাসে তৃতীয় ধারা...
.
তৃতীয় সিঁড়িতে সন্তান পাওয়ার আশা থাকে...! স্বামী ও স্ত্রী যখন সন্তানের মুখ দেখে তখন আনন্দে আত্মহারা হয়ে যায় এবং ভালোবাসা ও দাম্পত্য জীবনের সফলতা অনুভব করে।
কিন্তু জেনে রাখতে হবে স্বামী-স্ত্রীর জীবন,যাকে আমরা দাম্পত্য বলে অাখ্যা দিয়ে থাকি।তা শুধু সুখের নাম নয়,নয় দুঃখেরও বরং সুখ-দুঃখ,হাসি,কান্না,আনন্দ,বেদনা,যাতনা,অ­ভিমান,আশা,নিরাশা,সু-সময়,দুঃসময় উভয়কে ভাগ করে নিয়ে জীবন সাথি হওয়ার নাম হচ্ছে দাম্পত্য জীবন।চির সুখের জায়গা একমাত্র পরকালের সু-উন্নত জায়গা জান্নাত।জান্নাত ছাড়া চির সুখ কোথায়ও পাওয়া যায় না। দুনিয়ার সুখ ক্ষণস্হায়ী আর আখেরাতের সুখ চিরস্হায়ী।
.
সুতরাং স্বামী-স্ত্রী উভয়কেই ফিকে ভোগ বিলাসিতায় মগ্ন থাকলে চলবে না। বরং আখেরাতের ভয়ও অন্তরে রাখতে হবে।দুনিয়ার সুখের জন্য স্বামীর অন্তরে স্ত্রী কষ্ট দেওয়া, স্বামী স্ত্রী উভয়ে অভিমান করে বসে থাকলে হবে না ।হাদিসে আছে আদম সন্তান ভুল না করলে আল্লাহ এমন এক জাতি সৃষ্টি করতেন যারা ভুল করে। হাদিসের মধ্যে আরও আছে ভুলাকারীদের মধ্যে উত্তম তারাই, যারা স্বীয় ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে তাওবা করে নেয়।
স্ত্রী ভুল করলে স্বামী তাঁকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবে, সংশোধনের পথ বাতলে দিবে,স্বামীর ভুল হলে স্ত্রী সম্মান ও আদর সমেত স্বামীকে বুঝানোর চেষ্টা করবে।অভিমান করে বসে থাকলে, দাম্পত্য জীবনে দেখা দিবে দুঃখের ছাঁয়া,সমাজে দেখা দিবে বিভিন্ন অঘটন।প্রভাব পড়বে আগত নব জাতকের উপর অপসংস্কৃতির ছাপ। বিলীন হয়ে যাবে সুখ ।আসবে জীবনে দুঃখ নামের কালো পাথর।যা মানব মানবীকে নিয়ে যাবে অশান্ত নগরের পারে, যেখানে আগুন জ্বালানো আছে যা জ্বালিয়ে ভস্ম করে দিবে।
****স্বামী-স্ত্রী যা আদায় করতে হবে ***
স্বামী-স্ত্রী স্বীয় দায়িত্ব্যে ভ্রতি থাকতে হবে। আদায় করতে হবে সমূহ কর্তব্য ।স্বামী-স্ত্রী যেন দায়িত্ব্য আদায় পালন করতে শৈতল্য বোধ না করেন।একে অন্যের হক পালন করতে অলসতা না করেন বরং মনে প্রাণে যেন স্বামীর হুকুক আদায় করতে মনোযোগী হন।বিবাহে শরীয়তের কানুন মত উভয় কে কবুল পড়ানো হয়েছে। উক্ত কবুলের বিস্তারিত ব্যাখ্যা হল আমি স্বামীর সমস্ত হক আদায় করাকে মনে প্রাণে কবুল করলাম। অনুরূপ স্বামীর কবুল বলার একই অর্থ আমিও স্ত্রীর সমস্ত হক আদায় করাকে মনে প্রাণে কবুল করলাম। স্ত্রীর জন্য একান্ত কর্তব্য হল স্বামীর আনুগত্য হয়ে চলা। স্বামীর মালের হেফাজত করবে। স্বামীর অনুপস্হিতিতে নিজের ইজ্জতের হেফাজত করা ইত্যাদি ।হাদিসে উত্তম স্ত্রীর বর্ণনা করা হয়েছে যখন স্বামী-স্ত্রীর একে অন্যের দিকে দৃষ্টি পড়বে তখন খুশ নজর থাকা কর্তব্য ।আজকাল আধুনিকতার যুগে নারীরা স্বামীর অজান্তে নোংড়ামী ভোগ ,বিলাসিতা, কামও প্রেম নিয়ে বিভোর হয়ে থাকে। একদিন যিনি বিভোর ছিলেন যৌবনের দিকে পরে তিনি হয়ে যান মাতা-পিতা, ভাই বোনের বোঝা।
.
নারী ইজ্জতের সংরক্ষণ করতে পারলে তিনি হবেন সবার কাছে প্রিয় ও সম্মানের পাত্রী। মেশকের ন্যায়,তাঁর কাছ থেকে সুবাস ছড়াতে থাকবে,তাঁর উদরের সন্তানেরা হবে সম্মানের অধিকারী,যোগ্য মায়ের যোগ্য সন্তান।স্বামীর কাছে স্ত্রীর হক হলো স্ত্রীর পাপ্য আদায় করা,স্ত্রীর প্রয়োজনীয় সামগ্রী সাধ্যনুসারে যোগিয়ে রাখা।স্বামী যা পরবে স্ত্রীকে ও তা পরাবে, স্বামী যা খাবে স্ত্রীকে ও তা খাওয়াবে ইত্যাদি মনে রাখতে হবে। কিয়ামত দিবসে উভয়কেই প্রত্যেকের দায়িত্ব্য সম্পর্কে আল্লাহর কাছে আসামির কাটগড়ায় দাঁড়িয়ে জবাব দেহি করতে হবে এবং প্রত্যেকে সৎ কর্ম ও অসৎ কর্মের ফলাফল ভোগ করতে হবে সেদিন আল্লাহ কারো উপর জুলুম করবেন না।

1 comment: